ads

পদ কাকে বলে? পদ কত প্রকার ও কী কী? বিস্তারিত

সমার্থক শব্দ বা প্রতিশব্দ এবং বাক্যে প্রয়োগ

#পদকি? #পদকাকেবলে?

সাধারণত বাক্য গঠিত হয় এক বা একাধিক শব্দ দিয়ে। আর বাক্যে ব্যবহৃত প্রতিটি শব্দই হচ্ছে এক একটি পদ। 

যেমন ঃ 

'মিরাজ বাংলা পড়ছে' 

এই বাক্যে 'মিরাজ', 'বাংলা', এবং 'পড়ছে' এগুলো এক একটি পদ। 

পদ ব্যাপারটা বেশ সহজ। তবে অনেক সময় আমরা আমাদের বাংলা ব্যাকরণে দেয়া সংজ্ঞাটি বুঝতে পারিনা। আমি সেই ব্যাপারটিকেই একটু সহজ করি দিচ্ছি। 

সহজে পদ বোঝার জন্য আমাদেরকে আগে জানতে হবে, বিভক্তি কি? বিভক্তি সম্পর্কে জানতে এই লেখাটি পড়ুন ঃ বিভক্তি - বিস্তারিত।

এবার আমি ধরে নিচ্ছি তুমি জানো বিভক্তি কি। সাধারণত বাংলা ভাষায় প্রতিটি শব্দের সাথে বিভক্তি থাকে। অর্থাৎ বাংলা ভাষার প্রতিটি শব্দই বিভক্তিযুক্ত। কোন শব্দকে দেখে যদি মনে হয় যে এতে কোন বিভক্তি নেই তাহলে বুঝে নেবে সেখানেও বিভক্তি আছে। কোন শব্দে বিভক্তি না থাকলে সেখানে শুণ্য (০) বিভক্তি থাকে। এখন, আমরা জানি বাক্যে ব্যবহৃত প্রতিটি শব্দ হচ্ছে 'পদ' । আবার প্রতিটি শব্দই বিভক্তি যুক্ত । সুতরাং আমরা বলতে পারি বিভক্তিযুক্ত শব্দকেই পদ বলে।

Read More:ভাষা কি/ভাষা কাকে বলে কত প্রকার ও কি কি ?

পদ কাকে বলে?
পদঃ বিভক্তিযুক্ত শব্দকে পদ বলে। যেমনঃ 'আজকে রিফাতের মন খারাপ'। এই বাক্যের প্রতিটি শব্দ এক একটি পদ।
পদ কত প্রকার ও কি কি?
পদ প্রধাণত দুই প্রকার । যথাঃ
১) সব্যয় পদ
২) অব্যয় পদ
সব্যয় পদ আবার চার প্রকার। অর্থাৎ বলা যায় পদ মোট পাঁচ প্রকার। যথাঃ 
 ১) বিশেষ্য
২) বিশেষণ
৩) সর্বনাম
৪) ক্রিয়া
৫) অব্যয় পদ

এবার বাংলা ব্যাকরণের উদাহরণটি দেখা যাক।

"দুঃসাহসী অভিযাত্রীরা মানুষের চিরন্তন কল্পনার রাজ্য চাঁদের দেশে পৌছেছেন এবং মঙ্গলগ্রহেও যাওয়ার জন্য তারা প্রস্তুত হচ্ছেন।"

আমরা আগেই জানি বিভক্তিযুক্ত শব্দকে পদ বলে। এই বাক্যে লক্ষ্য করো প্রতিটি বাক্যে বিভক্তি আছে। অর্থাৎ এই বাক্যের প্রতিটি শব্দই এক একটি পদ।

যেমনঃ 

অভিযাত্রী + রা = অভিযাত্রীরা (রা)

মানুষ + এর = মানুষের (র)

কল্পনা + র = কল্পনার (র)

মঙ্গলগ্রহ + এ = মঙ্গলগ্রহে (এ) ইত্যাদি।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে বাক্যটিতে কোনটি কি পদ। এক্ষেত্রে কোনটি কি পদ তা বোঝার জন্য আমাদেরকে প্রত্যেক প্রকার পদ ভালোভাবে পড়তে হবে। বুঝতে হবে, যাতে করে আমরা কোনো বাক্য দেখলেই বুঝতে পারি তাতে কোন শব্দটি কি পদ। 

পদের প্রকারভেদ তো আমরা শিখবোই। তার আগে চলুন উপরের বাক্যটির পদগুলো ভাঙ্গার চেষ্টা করি।

১) বিশেষ্য পদ ঃ অভিযাত্রী, মানুষ, কল্পনা, রাজ্য, দেশ, মঙ্গলগ্রহ

২) বিশেষন পদ ঃ দুঃসাহসী, চিরন্তন, প্রস্তুত

৩) সর্বনাম পদ ঃ তারা

৪) ক্রিয়াপদ ঃ পৌছেছেন, হচ্ছেন, যাওয়ার

৫) অব্যয় পদ ঃ এবং, জন্য

বিশেষ্য পদ

বাক্যে ব্যবহৃত শব্দগুলোর মধ্যে যেসব শব্দ দ্বারা কোনো ব্যক্তি, জাতি, সমষ্টি, বস্তু, স্থান, কাল, ভাব, কর্ম, গুণ ইত্যাদির নাম বোঝানো হয় তখন তাকে বিশেষ্য পদ বলে।

সংজ্ঞাঃ কোনো কিছুর নামকে বিশেষ্য পদ বলে।

যেমন ঃ নজরুল, ঢাকা, আরব সাগর, অগ্নিবীণা, গরু, লবণ, জনতা, ভোজন, যৌবন ইত্যাদি।

বিশেষণ পদ

সংজ্ঞাঃ যে পদ বিশেষ্য, সর্বনাম ও ক্রিয়াপদের দোষ, গুণ, অবস্থা, সংখ্যা, পরিমাণ ইত্যাদি প্রকাশ করে, তাকে বিশেষণ বলে।

যেমন ঃ 

নীল আকাশ - 'নীল' হচ্ছে বিশেষণ

দক্ষ কারিগর - 'দক্ষ' হচ্ছে বিশেষণ

সর্বনাম পদ

সংজ্ঞা ঃ বিশেষ্যের পরিবর্তে যে শব্দ ব্যবহৃত হয় তাকে সর্বনাম বলে।

সর্বনাম সাধারণত পূর্বে ব্যহার করা কোনো বিশেষ্যকে প্রতিনিধিত্ব করে।

Read More:সমার্থক শব্দ বা প্রতিশব্দ এবং বাক্যে প্রয়োগ

যেমনঃ

হাতি প্রাণীজগতের সবথেকে বড় প্রাণী। তার শরীরটিকে মনে হয় বিশাল এক মাংসের স্তুপ।

এখন লক্ষ্য করুন আমরা এই দুতো বাক্য এভাবেও বলতে পারতাম-

হাতি প্রাণীজগতের সবচেয়ে বড় প্রাণী। হাতির শরীরটিকে মনে হয় বিশাল এক মাংসের স্তুপ।

কিন্তু আমরা বাক্যটি এভাবে লিখি/বলিনা। আমরা প্রথম উদাহরণের দ্বিতীয় বাক্যে 'হাতির' এই শব্দটির পরিবর্তে 'তার' শব্দটি ব্যবহার করেছি। এতে বাক্যটি অনেক বেশী গোছানো এবং সুন্দর হয়েছে।

এই 'তার' ই হচ্ছে সর্বনাম যা বিশেষ্য পদ 'হাতি' এর পরিবর্তে ব্যবহৃত হয়েছে।

আরেকটি উদাহরণ ঃ যারা দেশের ডাকে সাড়া দিতে পারে, তারাই সত্যিকারের দেশপ্রেমিক।

ক্রিয়াপদ

আমরা যখন বাক্য গঠন করি তখন বাক্যে কিছু শব্দ আসে যেগুলো দ্বারা কোনো কিছু করা, হওয়া, ঘটা ইত্যাদি বোঝায়। এগুলো হচ্ছে ক্রিয়াপদ। ক্রিয়া শব্দের অর্থ হচ্ছে কাজ বা কার্য। আর যেসব শব্দ দ্বারা কোনো কাজ বা কার্য সম্পাদন হয়েছে, হচ্ছে বা হবে বোঝায় সেই শব্দগুলোই হচ্ছে ক্রিয়াপদ।

সংজ্ঞাঃ যেসব শব্দ দ্বারা কোনো কার্য সম্পাদন করা বোঝায়, তাকে ক্রিয়াপদ বলে।

যেমনঃ 

মিরাজ বই পড়ছে।

ওরা ফুটবল খেলছে। 

এই দুটো বাক্যে কি কি কাজ হচ্ছে। প্রথম বাকে কাজ হচ্ছে 'পড়ছে' আর দ্বিতীয় বাক্যে কাজ হচ্ছে 'খেলছে'। এই দুটো শব্দই হচ্ছে ক্রিয়াপদ।

অব্যয় পদ

অব্যয় = ন + ব্যয়

যার কোনো ব্যয়/পরিবর্তন হয়না অর্থাৎ যেসব শব্দ সর্বদা অপরিবর্তনীয় তাই অব্যয়।

সংজ্ঞাঃ যে পদ সর্বদা অপরিবর্তনীয় থেকে কখনো বাক্যের শোভা বাড়ায়, কখনো একাধিক পদ/বাক্যাংশ/ বাক্যের মধ্যে সংযোগ বা বিয়োগ ঘটায় তাকে অব্যয় পদ বলে।

যেমন ঃ এবং, জন্য,আর, হ্যা, না, অথবা ইত্যাদি।

Read More:Articles- A, an এবং the কে Article বলে।

অব্যয়ের বৈশিষ্ট 
অব্যয়ের কিছু চমৎকার বৈশিষ্ট্য আছে। সেগুলো হচ্ছে-
১) অব্যয় শব্দের সাথে কোনো বিভক্তিচিহ্ন যুক্ত হয়না।
২) অব্যয় শব্দের একবচন বা বহুবচন হয়না।
৩) অব্যয় শব্দের স্ত্রী বা পুরুষবাচকতা নির্নয় করা যায়না।
আশা করছি সহজ করে বোঝাতে পেরেছি। তবুও মানুষ ভুল ত্রুটির উর্ধে নয়। কমেন্ট বক্সে আপনার মতামত জানাবেন । আর কোনো কিছু না বুঝলে তাও জানাবেন। ধন্যবাদ।


Post a Comment

1 Comments

Thank you for your message, I see all your messages, it is not possible to reply many times due to busyness, I hope I will reply to everyone in time, thank you for being with me. Thanks you watching my content. Please like, Follow, Subscribe.